ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাদের লক্ষ্য

বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন এবং সবচেয়ে বড় উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালের পহেলা জুলাই ঢাকার রমনা এলাকার ৬০০ একর জায়গা নিয়ে উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শুরুতে কলা, বিজ্ঞান এবং আইন এর মতমাত্র ৩টি অনুষদ, ১২টি  বিভাগ, ৬০ জন শিক্ষক, ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী এবং ৩টি আবাসিক হল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছিল। আর বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩ টি অনুষদের অধীনে, ৮৩টি বিভাগ রয়েছে। এছাড়া ১৩ টি ইন্সটিটিউট এবং ৫৬ টি রিসার্চ সেন্টার ও ব্যুরোর অধীনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩৭ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে প্রায় দুইহাজার শিক্ষক রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের থাকার জন্য রয়েছে ২০ টি আবাসিক হলএবং ৩টি হোস্টেল। এসবের বাইরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভ‚ক্ত ১০৫ টি কলেজ এবং ইন্সটিটিউট রয়েছে, যার অধীনে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষক এবং ৪৫ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। আর সে কারণেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যাপিঠ হিসেবে বিবেচিত হয়।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স‚চনালগ্ন থেকেই উচ্চ শিক্ষার মান বজায় রাখতে সচেষ্ট ছিল, সেকারণে বিশ্ববিদ্যালয় টি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমানসহ বাংলাদেশের ১৩ জন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বাংলাদেশের ৭ জন প্রধানমন্ত্রী এবং শতাধিকমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। বিখ্যাত বাঙালী পদার্থবিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছিলেন। সত্যেন্দ্রনাথ বসু আলবার্ট আইনস্টাইনের সঙ্গে যৌথভাবে বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান প্রদান করেন, যা পদার্থবিজ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপ‚র্ণ আবিষ্কার বলে বিবেচিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং সাবেক উপাচার্য আ ফ ম ইউসুফ হায়দার ১৯৯৪ এবং ২০১৩ সালে দুইবার পদার্থ বিজ্ঞানের নোবেল পুরষ্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থী ড. মুহাম্মদ ইউনুস শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেছেন। এছাড়া পদার্থবিজ্ঞান, রাসায়নবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান এবং সাহিত্য ও শিল্পকলায় অসামান্য অবদান রাখা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন।


বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি শিক্ষার্থীর মনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করার সুপ্ত বাসনা থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকটি ইউনিটের অধীনে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়।এতদিন এই ভর্তি পরীক্ষা ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণি হিসেবে অনুষ্ঠিত হলেও, উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে, এখন থেকে এই ভর্তি পরীক্ষা আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম নামে অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষার ইউনিট গুলোতেও বেশ খানিকটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। অতীতে বিজ্ঞান অনুষদের জন্য 'ক' ইউনিট, মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের জন্য 'খ' ইউনিট, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের জন্য 'গ' ইউনিট, চারুকলা অনুষদের জন্য 'চ' ইউনিট এবং বিজ্ঞান, বানিজ্য এবং মানবিক শাখার শিক্ষার্থীরা তাদের বিভাগ পরিবর্তনের জন্য ঘ ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারত। তবে এখন এই ঘ ইউনিট বাতিল করা হয়েছে। আগের পাঁচটি ইউনিটের পরিবর্তে এখন থেকে চারটি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে ইউনিটের নামও বদলে ফেলা হয়েছে। ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য 'বিজ্ঞানইউনিট', ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য 'ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট', মানবিক শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য 'কলা, আইন ও সামাজিকবিজ্ঞান ইউনিট' এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য 'চারুকলা ইউনিট'-এ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিতহবে।নতুন নিয়ম অনুযায়ী শর্ত সাপেক্ষে মানবিক শাখার শিক্ষার্থীরাও বিজ্ঞান অনুষদের বেশ কিছু বিভাগে ভর্তি হতে পারবে।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার যুদ্ধে অনেকেই অহেতুক আতঙ্কিত হয়ে, প্রতিযোগীতা থেকে ছিটকে পড়ে। কিছু কৌশল অবলম্বন করে, গোছানো প্রস্তুতি নিলে ভর্তি যুদ্ধে সফল হওয়া সম্ভব। সেজন্য কয়েকটি অনুসরণীয় ধাপ হল: ১. পাঠ্য বই অধ্যায়ন করা ২. ভর্তি সহায়ক বই পাঠ করা ৩. প্রশ্নব্যাংক পর্যালোচনা করা এবং ৪. মডেল টেস্ট অনুশীলন করা।


যেকোন ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড অনুমোদিত বইগুলোর উপর সর্বোচ্চ জোর দিতেহবে।


যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন কেমন হয় তা জানতে বিগত বছরের প্রশ্নগুলো ভালোভাবে পর্যালোচনা করা অত্যন্ত জরুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদে ভর্তির প্রস্তুতি হিসেবে, রয়েল সায়েন্টিফিক  পাবলিকেশনস প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক ইউনিট প্রশ্নব্যাংক বইটি অত্যন্ত কাজে দিবে। কারণ এই বইতে বিগত বছরের প্রতিটি প্রশ্নপাঠ্য বইয়ের কোন অধ্যায়ের কত নম্বরপৃষ্ঠা থেকে এসেছে তাও উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সাথে প্রশ্নের উত্তরগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া আছে।


বিভিন্ন কোচিং এবং প্রকাশনীর অসংখ্য বইয়ের ভেতর থেকে সবচেয়ে গোছানো এবং প্রাঞ্জল ভর্তি সহায়ক বই বাছাই করে প্রস্তুতি নিতে হবে। এক্ষেত্রে The Royal Admission Books for Engineering & Varsity Admission Test সিরিজের বইগুলো বেশ কার্যকর হতে পারে।


এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা প্রস্তুতির সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল মডেল টেস্ট অনুশীলন করা। একজন শিক্ষার্থী তার প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিতে এবং ভর্তি পরীক্ষার জন্য আতœবিশ্বাস অর্জন করতে, মডেল টেস্ট সমাধানের কোন বিকল্প নেই। এই ক্ষেত্রে ভর্তিচ্ছুদের সবচেয়ে ভালো বন্ধুর পরিচয় দিবে The Royal DU Model Test বইটি। এই বইতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আদলে ২০ টি মডেল টেস্ট দেওয়া আছে, যেখানে প্রশ্নপত্রেই উত্তর লিখে অনুশীলন করা যাবে। সেই সাথে নিজের উত্তর সঠিক হয়েছে কিনা তা দ্বিতীয় খন্ডের উত্তর পত্রের সহায়তা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।


আশাকরি এই পদক্ষেপ গুলো অনুসরণ করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি যুদ্ধে সফল হওয়া অনেক সহজ হবে। রয়েল সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন্স এর ওয়েবসাইট থেকে বইগুলো সহজেই অর্ডার করা যাবে।


বইটির অর্ডার লিংকঃ https://trsp.link/DUAdmissionKAUnitQuestionBank