ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যাদের স্বপ্ন

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি প্রতিষ্ঠান হল চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা চুয়েট, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা কুয়েট এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা রুয়েট।


১৯৬৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দ্বিতীয় প্রকৗশল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রুয়েটের যাত্রা শুরু হয়েছিল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের অধীনে ১৯৬৭ সালে কুয়েট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চুয়েট এর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। প্রথমদিকে এই তিনটি প্রতিষ্ঠানই ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।বাংলাদেশের প্রকৌশল মহাবিদ্যালয়গুলো পরিচালনার সুবিধার্থে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা বিআইটি গঠিত হয়। তখন রাজশাহী, খুলনা এবং চট্টগ্রামের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলো যথাক্রমে বিআইটি রাজশাহী, বিআইটি খুলনা এবং বিআইটি চট্টগ্রাম হিসেবে সীমিত আকারের স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে রূপপান্তরিত হয়। কিন্তু বিআইটি অধ্যাদেশের সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে জাতীয় সংসদে একটি সরকারী অধ্যাদেশ পাশ করার মাধ্যমে দেশের সকল বিআইটি কে পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়। তখন থেকেই মূলত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা চুয়েট, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা কুয়েট এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা রুয়েট এর বর্তমান রূপ লাভ করে।


বাংলাদেশের প্রধান সারির এসব প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনফারেন্স, সেমিনার, ওযার্কশপ, ট্রেইনিং এবং বিজ্ঞান উৎসবের এর আয়োজন করা হয়। এদিক থেকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনেক এগিয়ে। ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন মেকানিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার টেকসই মডেল গড়ে তোলার বার্ষিক আন্তর্জাতিক কনফারেন্স ওয়েস্টসেফ, ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ইলেকট্রিক্যাল ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি সহ কুয়েটে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক কনফারেন্স নিয়মিত আয়োজন করা হয়। অন্যদিকে গবেষণার দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠানের গবেষণা সম্প্রসারণ দফতর মোবাইল গেমস অ্যান্ড অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট ল্যাব, হাইভোল্টেজ ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাব, রাডার অ্যান্ড স্যাটেলাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাব, অত্যাধুনিক ইলেক্ট্রিক্যাল মেশিন অ্যান্ড পাওয়ার সিস্টেম ল্যাব, হাই কম্পিউটিং ল্যাব, আইওটি ল্যাব, ন্যানো টেকনোলজি ল্যাব এবং রোবোটিক্স ল্যাবের মত অত্যাধুুনিক গবেষণাগার স্থাপনের ফলে, বিগত কয়েক বছরে রুয়েট শিক্ষার্থীদের গবেষণা কার্যক্রম অনেক বেড়েছে। এছাড়া চুয়েটের রয়েছে বাংলাদেশের সেরা রোবটিক্স ঐতিহ্য।  চুয়েটের একদল শিক্ষার্থী ২০১৩ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্বলিত রোবট তৈরী করে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল, সেই রোবট যুক্তরাষ্ট্রের নাসা আয়োজিত ৫০ টি দেশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করেও সফলতা পেয়েছিল। পরবর্তীতে সেই রোবোটিক্স দল প্লানেটার লিমিটেড নামে রোবট উৎপাদনকারী কম্পানি গড়ে তুলেছে। যার অধীনে এখনও পর্যন্ত ২৮ টি রোবট নির্মান করা হয়েছে। এমনকি তাদের উৎপাদিত ১১টি রোবট বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে, বিদেশেও রপ্তানিকরা হচ্ছে।


বর্তমানে সম্মিলিত প্রকৌশল গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে চুয়েট, কুয়েট এবং রুয়েট এ একসাথে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রকৌশলী হবার বাসনা নিয়ে বেড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের কাছে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পছন্দের তালিকায় শীর্ষেই থাকে। চুয়েট, কুয়েট এবং রুয়েট এর মত প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মত নয়। অনেকটাই ব্যতিক্রম এই ভর্তি পরীক্ষার জন্য,প্রস্তুতিটাও নিতে হয়অত্যন্ত সাজানো গোছানোভাবে। বাংলাদেশের শীর্ষ তিনটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার নিয়ে অহেতুক আতঙ্ক কিংবা অতিরিক্ত আতœবিশ্বাস ক্ষতির কারণ হতে পারে।


কয়েকটি সুনির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করে প্রস্তুতি নিলে এই ভর্তি যুদ্ধে সফল হওয়া সম্ভব। যেকোন ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড অনুমোদিতবইগুলোর উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।


যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে বিগত বছরের প্রশ্নগুলো ভালোভাবে পর্যালোচনা করা অত্যন্ত জরুরী। এর মাধ্যমে ১. প্রশ্ন কেমন হয় ২. কোন অধ্যায় এবং বিষয় থেকে বেশি প্রশ্ন আসে এবং ৩. প্রশ্নোত্তরের জন্য কেমন সময় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে পরিষ্কার একটি ধারণা তৈরী হয়। চুয়েট, কুয়েট এবং রুয়েট এর মত শীর্ষ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত প্রকৌশল গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে, The Royal CKRUET Question Bank বইটি অত্যন্ত কার্যকর। কারণ এই বইতে বিগত বছর গুলোর প্রতিটি প্রশ্ন পাঠ্য বইয়ের কোন অংশ থেকে এসেছে তা উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিগত বছরের প্রশ্নের আদলে নতুন কী কী প্রশ্ন হতে পারে, সে সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।


বিভিন্ন কোচিং এবং প্রকাশনীর অসংখ্য বইয়ের ভেতর থেকে সবচেয়ে গোছানো এবং প্রাঞ্জল ভর্তি সহায়ক বই বাছাই করে তা থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। এক্ষেত্রে  The Royal Admission Books for Engineering & Varsity Admission Test সিরিজের বইগুলো বেশ কার্যকর হতে পারে। বইগুলোতে প্রতিটি প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর দেওয়া আছে।


বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা প্রস্তুতির সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল মডেল টেস্ট অনুশীলন করা। মডেল টেস্ট সমাধানের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী তার প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিতে পারে; সেই সাথে পরীক্ষার জন্য এক ধরনের আতœবিশ্বাস তৈরী হয়। এক্ষেত্রে বুয়েট ভর্তিচ্ছুদের সবচেয়ে ভালো বন্ধুর পরিচয় দিবে The Royal CKRUET Model Test বইটি। এই বইতে সম্মিলিত প্রকৌশল গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আদলে ২০ টি মডেল টেস্ট দেওয়া আছে, যেখানে প্রশ্নপত্রেই উত্তর লিখে অনুশীলন করা যাবে। সেই সাথে উত্তর সঠিক হয়েছে কিনা তা দ্বিতীয় খন্ডের উত্তর পত্রের সহায়তা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।


বাসায় বসে ঘড়ি ধরে মডেল টেস্টগুলো অনুশীলন করলে, যে কোন শিক্ষার্থী সম্মিলিত প্রকৌশল গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার নিঃসন্দেহে অনেক এগিয়ে যাবে।


বইটির অর্ডার লিংকঃ https://trsp.link/CKRUET_Question_Bank