ChatGPT কেন এতো সাড়া ফেলল?

সাম্প্রতিক সময়ে Chatgpt সারা বিশ্বে বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে। কিন্তু আমরা কি জানি এটি আসলে কি? কিভাবে কাজ করে?


ChatGPT কে বোঝার জন্য আগে জানতে হবে Chatbot সম্পর্কে। Chatbot শব্দটি এসেছে (Chat + Robot) থেকে। নাম দেখেই তোমরা হয়ত বুঝে ফেলেছ যে, এটি এমন রোবট যার সাথে কথা বলা যায়। সোফিয়া নামের রোবটটির কথা আমরা শুনেছি। এটি একটি চ্যাটবট। তবে সব চ্যাটবটে যে হার্ডওয়্যার থাকবে এমনটা কিন্তু না!


সহজ ভাষায়, চ্যাটবট একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম যে অনেকটা মানুষের মত কথা বলতে পারে। পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত প্রায় তিন লক্ষেরও বেশি চ্যাটবট রয়েছে। কই সবগুলোর নাম তো আমরা শুনি নি ! তাই প্রশ্ন আসে, Chatgpt র বিশেষত্বটা কি যা একে এতো বিখ্যাত করে তুলেছে?


এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য জানতে হবে, চ্যাটবটের প্রকারভেদ সম্পর্কে। মোটাদাগে ভাবলে চ্যাটবট দুই রকমের। নির্ধারিত নিয়মভিত্তিক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর।


নিয়মভিত্তিক চ্যাটবটকে শুধু নির্ধারিত কিছু প্রশ্ন করা যায়। তার মেমোরিতে সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর সেভ করা থাকে। এর বাইরে প্রশ্ন করলে তার উত্তর মেলে না।




অন্যদিকে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর চ্যাটবটগুলো বেশ চমকপ্রদ। এখানে বিভিন্নরকমের প্রশ্ন করা যায়। আর অনেকটা সন্তোষজনক জবাব মেলে। তবে এর কাজ করার পদ্ধতি বেশ জটিল, কেননা মানুষ একই প্রশ্ন অনেকভাবে করতে পারে। তাই প্রয়োজন Natural Language Processing বা সহজ ভাষায় মানুষের ভাষাটিকে প্রসেস করে তার মূল অর্থ বোঝা। এরপরের ধাপ হল, ডেটাবেস থেকে প্রাসঙ্গিক উত্তর খুঁজে দেয়া। এই কাজের জন্য রয়েছে Machine Learning Algorithm. এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি বিশেষ শাখা। এটি নিয়ে আমরা আরেকদিন আলোচনা করব।


বলাই বাহুল্য ChatGPT একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর চ্যাটবট। তবে মানুষের ভাষাকে সূক্ষ্মভাবে বোঝার ক্ষমতা একে আলাদা করেছে অন্যসব চ্যাটবট থেকে। শুধু তাই নয়। এর আরেকটি অভিনব বৈশিষ্ট্য হলো, গোছানো ও প্রাসঙ্গিক উত্তর দেয়া যা অন্যসব চ্যাটবটকে ছাড়িয়ে গেছে।


এবার কিছু মজাদার তথ্য শেয়ার করা যাক। ChatGPT ইতোমধ্যে অনেকগুলো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় পাশ করে গেছে। তার মধ্য Wharton’s Entrance Exam, United States Medical Licensing Examination, Multistate Bar Exam, Google Level Three Engineer Recruitment Exam, SAT Exam অন্যতম।


তবে ChatGPT র কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। এর ডেটাবেসে ২০২১ সাল পর্যন্ত তথ্য রাখা আছে। তাই সাম্প্রতিক কোনো প্রসঙ্গে এর কাছে জবাব মেলে না। আশার বিষয় হলো, এটিকে আপডেট করার জন্য প্রতিষ্ঠাকারী OpenAI কোম্পানিটি প্রতিনিয়তই কাজ করে যাচ্ছে। আর বড় বড় টেকজায়ান্ট কোম্পানিগুলো কাজ করছে এর বিকল্প কিছু বের করার।


গুগল এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে তাদের নতুন চ্যাটবট BARD এর আবির্ভাবের কথা। শেষে এতটুকু বলা যায় যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আরো অভাবনীয় আবিষ্কারের দেখা পাওয়া এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা