পলিজেনিক টেস্টঃ আগামীর রোগ নির্ণয়

আচ্ছা, কেমন হতো যদি আমরা বর্তমান সময়ে বসে জানতে পারতাম যে, আজ থেকে কয়েকবছর পরে আমাদের কী কী অসুখ হতে পারে?


পলিজেনিক টেস্টের মাধ্যমে এটা জানা সম্ভব। এই টেস্টের স্কোর (Polygenic Risk Score - PRS) দেখে বোঝা যাবে, ভবিষ্যতে একজন ব্যক্তির হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা কতটুকু।


এই টেস্ট সম্পর্কে বোঝার জন্য অল্প একটু বায়োলজি জানতে হবে। মানবদেহের কোষে রয়েছে ৪৬ টি ক্রোমোজম। প্রতিটি ক্রোমোজমে থাকে ডিএনএ। আর ডিএনএ তে থাকে জিন। এই জিনই নিয়ন্ত্রণ করে মানবদেহের সব কার্যকলাপ।


বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করে দেখেছেন, একই জেনেটিক রোগে আক্রান্ত মানুষের জিনের বিন্যাসে মিল রয়েছে। অসংখ্য মানুষের জিনের বিন্যাসের সব তথ্য রাখা আছে বায়োব্যাংকের ডেটাবেসে। একজন মানুষের একটি জেনেটিক রোগ হবার সম্ভাবনা বের করার জন্য তার জিনের বিন্যাসকে তুলনা করা হয় সেই রোগে আক্রান্ত অন্যান্য মানুষের সাথে। যতবেশি মিল পাওয়া যাবে তত বেশি স্কোর বা সম্ভাবনা। এটিই হল পলিজেনিক টেস্ট।


পলিজেনিক টেস্ট স্কোর দেখে আগেভাগেই কিন্তু অনেক অসুখ প্রতিরোধ করা যায়। আবার ভ্রূণের জিনে কোনো অস্বাভাবিকতা থাকলে পলিজেনিক টেস্টে তা বোঝা যায়। আর CRISPR টেকনোলজি ব্যবহার করে অস্বাভাবিক জিনগুলোকে সরিয়ে ফেলা যায়।


তবে এই টেস্টের কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। এটি পরিসংখ্যান নির্ভর, তাই তুলনা করার মত যথেষ্ট মানুষের তথ্য না থাকলে এই টেস্টের গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়। আবার, একটি রোগ হবার পেছনে পরিবেশ বা জীবনযাত্রার ধরণেরও ভূমিকা থাকে, যা এই টেস্টে বিবেচনা করা হয় না।


বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যে চিকিৎসাক্ষেত্রে এটি প্রয়োগ করা হচ্ছে। সীমাবদ্ধতাগুলোকে কমিয়ে আনলে, পলিজেনিক টেস্ট চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন যুগের সূচনা করবে।