পানিতে দীর্ঘসময় থাকলে হাত-পায়ের ত্বক কুঁচকে যায় কেন?

গ্রীষ্মকালে পানিতে শরীর ভিজিয়ে রাখতে কার না ভালো লাগে! তোমরা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছ বেশিক্ষণ পানিতে থাকলে হাত-পায়ের ত্বক কুঁচকে যায়। কেন এমনটা হয় বলতে পার কি?
প্রথমেই তোমাদের মাথায় অভিস্রবণের কথা আসবে। পানিতে হাত ভিজিয়ে রাখা অবস্থায় বাইরের পরিবেশে পানি বেশি, চামড়ার ভেতর তুলনামূলকভাবে পানি কম। ত্বককে আমরা অর্ধভেদ্য পর্দা হিসেবে ধরতে পারি। এখন পর্যন্ত সব ঠিকঠাক। কিন্তু ত্বকের ভেতর পানি ঢুকলে ত্বক তো আরো ফুলে-ফেঁপে ঢোল হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে তো উল্টো ঘটে, ত্বক কুঁচকে যায়। তাহলে ত্বক কুঁচকে যাওয়ার কারণ শুধু অভিস্রবণ নয়। এই প্রশ্নের উত্তর তাহলে কি!


১৯৩৫ সালে কয়েকজন ডাক্তার খেয়াল করলেন যাদের হাতের নার্ভ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের ত্বক সাধারণ মানুষের মত কুঁচকে যাচ্ছে না। তাহলে ত্বক কুঁচকে যাওয়ার সাথে নার্ভের (নিউরনের) সম্পর্ক আছে।


আমরা ত্বকের যে স্তরটা দেখতে পাই সেটার নাম এপিডার্মিস। এর নিচে রয়েছে ডার্মিস স্তর। এই ডার্মিস স্তরেই রয়েছে তেলগ্রন্থি আর ঘামগ্রন্থি। যখন আমরা পানিতে হাত ভেজায় তখন পানি ত্বকের ছিদ্র দিয়ে তেলগ্রন্থি আর ঘামগ্রন্থিতে প্রবেশ করে। এতে করে সেখানকার ঘনত্ব কমে যায়। ঘনত্ব যাতে বেশি কমে না যায় সেজন্য ডার্মিস স্তরে থাকা নিউরনগুলো রক্তনালীকে সংকুচিত করে ফেলে। ডার্মিসের উপরের স্তর এপিডার্মিসে কোনো নিউরন বা রক্তনালী নেই। তাই এপিডার্মিস টানটান থাকে কিন্তু ডার্মিস স্তর কুঁচকে যায়। এজন্য বাইরে থেকে দেখে ত্বক কুঁচকানো মনে হয়।



শেষ করার আগে তোমাদের জন্য একটা প্রশ্ন রেখে যাই। আমরা যখন পুকুরে বা সুইমিংপুলে নামি তখন আমরা সমস্ত শরীরটাকেই ভেজায়। তাহলে পুরো শরীরের চামড়া কুঁচকানোর কথা; কিন্তু হাত-পায়ের চামড়া বেশি কুঁচকায় কেন?